রাজনৈতিক লোকেদের অবশ্য ছুটি নেই। রাজনৈতিক লোক মানে? প্রাক্তন সেফোলজিস্ট, প্রাক্তন আম আদমি পার্টি নেতা, অধুনা স্বরাজ আন্দোলনের নেতা যোগেন্দ্র যাদবের টুইটার অ্যাকাউন্টের ‘পরিচিতি’ সেকশনে যেমন বলা ছিল — ‘পলিটিক্যাল সায়েন্টিস্ট, পলিটিক্যাল অ্যাকটিভিস্ট … পলিটিক্যাল অ্যানিমাল’। রাজনৈতিক প্রাণী। সরকার নীতি বিরোধী উদ্দেশ্য আইন আন্দোলন পার্টি গণতন্ত্র কোর্ট প্রচার অধিকার সংস্কার — এসব নিয়ে তিনশো পঁয়ষট্টি দিন চব্বিশ ঘন্টা লেগেই আছে।
আর আছে হাঁফিয়ে ওঠা পিলপিলপিলপিল লোক। কাজ করতে করতে, বাজার করতে করতে, সংসার করতে করতে, রুটিন মানতে মানতে, চিলচিৎকার শুনতে শুনতে — হাঁফিয়ে ওঠা। যাদের প্রত্যেকের জীবন একেকটা আলাদা আলাদা গল্প — যদি মন দিয়ে শোনা যায়। কী অবলীলায় ‘তুচ্ছ’ আর ‘সিরিয়াস’ সব ব্যাপার এক নিঃশ্বাসে, নিজের ব্যাপার আর অন্যের ব্যাপার একই প্যারাগ্রাফে। আর না শুনলে? এলেবেলে। সাবঅল্টার্ন। নিপীড়িত। শ্রমিক। কৃষক। দলিত। ওই এক-একটা জাবদা ব্র্যাকেটেই সব ঢুকে যাবে।
সে যাকগে। যা বলছিলাম। তা এই হাঁফিয়ে ওঠা জীবনে তাল জ্ঞান ঠিক রাখাই দায়, তার ওপর আবার ঠিক ভুল বিচার! ওই নিজেদের দৈনন্দিনের পিঠে চড়েই জীবন নির্বাহ। কোথা কোথা দিয়ে গেলে? বলতে পারা যাবে না। নিজে নিজের ইতিহাস বলতে গেলে নিজেকে নিজের থেকে আলাদা হতে হয়। তা তো নয়! কঠিন করে বললে, অস্তিত্ব আছে, সত্ত্বা নেই।
নাকি অস্তিত্বটাই সত্ত্বা? দৈনন্দিনের হাসি কান্না ঠাট বাট আমোদ আহ্লাদ বাসনা যন্ত্রণা নিয়ে ওই পিলপিলপিলপিল সত্ত্বা। তরলের মতো। গ্যাসের মতো। হাজার ঢাকনা দাও, সেই এদিক ওদিক দিয়ে গলে গালে কোথায় কোথায় চলে যায়!
এবার রাজনীতি-কে যদি ওই নিজ-দৈনন্দিন নির্ভর, তরল, গ্যাসীয়, পিলপিল শত কোটি পৃথক সত্ত্বার প্রত্যেকটির ওপর বসানো হয়, তাহলে ?
রাজনীতির লোকেরা যা নিয়ে ‘জানকবুল’ করে, রাজনৈতিক লোকেরা যা নিয়ে মাথা খোঁড়ে অহর্নিশি, তাকে কি ভিডিও গেমসের চেয়ে বেশি কিছু বলে মনে হবে?